বিশেষ প্রতিনিধিঃ পাওনা টাকা না দিতে বিএনপি নেতা ও নওয়াপাড়া বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনিকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের ছক তুহিন ঠাকুরের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হতে বসেছেন নওয়াপাড়া বন্দরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খান নামের এক ব্যক্তি। তথ্য অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়ংকর ঠাকুরের ভয়ংকর কর্মকান্ডের ফিরিস্তি। ফলে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষমতাচুত স্বৈরাচার সরকারের খুলনা বিভাগ জুড়ে দুর্নীতি, অন্যায়, অনিয়ম ও অত্যাচারের থাবা বসানো শেখ হেলাল পরিবারের অশীর্বাদপুষ্ট খুলনা ও মোংলা বন্দরের বহুলালোচিত ও স্বঘোষিত ডন শাহ আলম ঠাকুর তুহিন ওরফে তুহিন ঠাকুর ওরফে দরবেশ এবার দেশের ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নদী বন্দরে চক্রান্তের থাবা বসাতে শুরু করেছেন বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শেখ হেলাল পরিবার তথা আ.লীগের আশীর্বাদে পিয়ন থেকে ১০ জাহাজের মালিক ও ফ্লাট-প্লটসহ বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া তুহিন ঠাকুর রয়েছে বহালতবিয়ত সে নওয়াপাড়া নদী বন্দরের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ মিজানুর রহমান খানের পাওনা কোটি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এ চক্রান্তের জাল বিস্তার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তার এই চক্রান্তকে সফল করতে নওয়াপাড়ার নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের আস্থাভাজন বিশিষ্ট সার, সিমেন্ট, কয়লা ও জাহাজ ব্যবসায়ী এবং কণা ইকোপার্কের সত্ত্বাধিকারী আসাদুজ্জামান জনিকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় জাহাজ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে নওয়াপাড়ার শিপিং এন্ড ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মেসার্স গাংচিল ট্রান্সপোর্ট এর কার্যালয়ে সত্ত্বাধিকারী বশির উদ্দিনের সমন্বয়ে নওয়াপাড়ার বিশিষ্টজনদের উপস্থিতি ও অভিযোগকারী তুহিন ঠাকুরের শ্যালক, তার প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষকসহ খুলনার নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে শালিসি বৈঠকে মিমাংসিত এবং পাওনা টাকা পরিশোধের অঙ্গিকার দিয়ে স্বাক্ষর করে যাওয়ার পরও টাকা পরিশোধ না করে জলঘোলা করছেন বহুলালোচিত দুর্নীতিবাজ তুহিন ঠাকুর। দীর্ঘদিন টালবাহানা শেষে তিনি এ চক্রান্তের পথ বেছে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান খান অভিযোগ করেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খান অভিযোগ করেন, দীর্ঘ আট/দশ বছর যাবৎ তিনি খুলার ইস্টার্ণ ক্যারিয়ারের মালিক শাহ আলম ঠাকুর তুহিন ওরফে তুহিন ঠাকুরের সাথে ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ৩/৪ বছরে তার কাছে প্রায় কোটি টাকা পাওনা হয়েছে। একের পর এক টাকার তাগাদা দিলেও তিনি টাকা না দিয়ে নানা টালবাহানা করেন। এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ পরিবারের সবচেয়ে আস্থাভাজন বলে ভয় দেখাতেন। একপর্যায়ে ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী তার প্রতিষ্ঠানের প্যাডে প্যাসিফিক কনজ্যুমার গুডস্ লিঃ ভাড়া ও ডেমারেজের টাকা পরিশোধ করছে না উল্লেখ করে তিনি নওয়াপাড়া বন্দরে প্যাসিফিক ফুডস কনজ্যুমারের মালামাল লোড আনলোড বন্ধ করে তাদের জাহাজ আটকে রাখতে বলেন। অন্যথায় তিনি আমার পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না বলে জানান। পরবর্তীতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী আমার প্রতিষ্ঠানের প্যাডে তুহিন ঠাকুরের নিকট মূল বিল ও ডেমারেজসহ এক কোটি চৌদ্দ লাখ বত্রিশ হাজার পাঁচশত ১২ টাকা পরিশোধের জন্য লিখিত ভাবে তাগাদা দেয়া হয়। তাতেও সাড়া না মেলায় খুলনার নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির কর্মকর্তার্দের মাধ্যমে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হই। সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ নওয়াপাড়ার গাংচিল ট্রান্সপোর্টের মালিক বশির উদ্দিনের অফিসে তার মধ্যস্থতায় এক শালিসি বৈঠক বসে। সেখানে খুলনা নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির নেতা দোলোয়ার হোসেন, চন্দন, শাহাদাৎ হোসেন, ইস্টার্ণ ক্যায়িারের কুদ্দুস, শাহ্ আলম ঠাকুর তুহিন ওরফে তুহিন ঠাকুরের শ্যালক লিটু, ইস্টার্ণ ক্যারিয়ারের হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। নওয়াপাড়ার নৌ-পরিবহন সংশ্লিষ্ঠ আরও বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং খুলনার আরও কয়েকজন নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের উপস্থিতিতে পূণরায় যাবতীয় হিসাব পর্যালোচনা করে আমার পাওনা টাকা যথার্থ বলে প্রতিটি হিসেবে ওকে লিখে ইস্টার্ণ ক্যারিয়ারের হিসাবরক্ষক স্বাক্ষর করেন এবং দ্রুতই পাওনা টাকা পরিশোধের অঙ্গিকার করেন। কিন্তু খুলনায় যেয়েই তারা পূণরায় টালবাহানা করে নানা নাটক সাজাতে থাকেন। একপর্যায়ে আমি উপায়ন্তর না পেয়ে অভয়নগর থানায় ইস্টার্ণ ক্যারিয়ারের সত্ত্বাধিকারী শাহ আলম ঠাকুর তুহিন ওরফে তুহিন ঠাকুরের নিকট ডেমারেজ ও মূলবিল মোট পাওনা এক কোটি চৌদ্দ লাখ বত্রিশ হাজার পাঁচশত ১২ টাকা আদায়ে গত ১৬ মার্চ লিখিত অভিযোগ করি। আইনের আশ্রয় নেয়ায় আরও ক্ষিপ্ত হয় তুহিন ঠাকুর। বিষয়টি নিয়ে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঈদ উল আযহার পর বিষয়টি মিমাংসা করবেন অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। শালিসে নওয়াপাড়ার অন্যান্য নৌ-পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের ন্যায় বিশিষ্ট জাহাজ ব্যবসায়ী ও নওয়াপাড়ার স্বনামধন্য সার সিমেন্ট, কয়লা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জনি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ও নওয়াপাড়ার কণা ইকোপার্কের মালিক বিএনপি নেতা মোঃ আছাদুজ্জামান জনিও উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে টাকা দেয়া নিয়ে টালবাহানায় আসাদুজ্জামান জনি তুহিন ঠাকুরকে ফোন করলে তিনি বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির কাছেও আমি টাকা পাবো বলে স্বীকার করে এবং পরিশোধের অঙ্গিকার করে। এরপরও নানা নাটকিয়তা শুরু হলে আমি ইস্টার্ণ নৌ-যান সংশ্লিষ্ট স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় নেতাদের সাথে পরামর্শ করে টাকা আদায়ের স্বার্থে ইস্টার্ণ কোম্পানীর জাহাজের লোড আনলোড বন্ধ করে রাখি। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং কোটি টাকা আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে খুলনার বহুলালোচিত ও মোংলার এক সময়ের স্বঘোষিত ডন শেখ পরিবারের বরপুত্র শাহ্ আলম ঠাকুর তুহিন ওরফে তুহিন ঠাকুর বিভিন্ন দপ্তরে তার জাহাজ জোরপূর্বক আটকে রেখে সন্ত্রাসী কর্তৃক জাহাজ শ্রমিকদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করার গল্প