বিশেষ প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের ইতিহাস বদলেছে, ক্ষমতা বদলেছে । কিন্তু যশোরের অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন পরিষদের কর রশিদে এখনও দৃশ্যমান শেখ মুজিবুর রহমান ও পতন হওয়া ফ্যাসিবাদী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যা অনেকের চোখে প্রশ্ন তুলেছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, আবার অনেকে বলছেন, এটি সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিচিহ্ন মাত্র। দেশের মানুষের রায় উপেক্ষা করে এক যুগের বেশি সময় ধরে চালানো এক নব্য-স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটেছে সম্প্রতি। দুর্নীতি, গুম, খুন, বাকস্বাধীনতার দমন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ—সবমিলিয়ে শেখ হাসিনার শাসনকে অনেকেই ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায় বলেই মনে করেন। এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষ মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। রাস্তায় ফিরেছে প্রতিবাদ, গণমাধ্যমে ফিরেছে সত্য। অথচ পায়রা ইউনিয়ন পরিষদের কর রশিদ যেন আজও আটকে আছে সেই ভয়ংকর অতীতের ছায়ায়। এখনও করা হয়নি সংস্কর
স্থানীয় একজন নাগরিক বলেন, “এই রশিদ যখন দেখি, তখন যেন মনে হয়—আমরা এখনো সেই দুঃসময়ের অধীনে। অথচ নতুন সরকার ক্ষমতায়, নতুন আশা জেগেছে। কিন্তু এই ছবি কি শুধুই স্মৃতি, না কি ইচ্ছাকৃত রাখা হয়েছে ছাপ? বর্তমান সরকার যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে ব্যস্ত, তখন ইউনিয়ন পরিষদের এই ধরনের দৃষ্টান্ত বিভ্রান্তিকর এবং প্রশাসনিক অবহেলার জ্বলন্ত প্রমাণ।
তথ্য ও বিবেচনার আলোকে বলা যায়, শেখ হাসিনার শাসন ছিল গণতন্ত্রের রক্তাক্ত এক মঞ্চ।
বিরোধী কণ্ঠরোধ, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুম-খুন, একের পর এক পাতানো নির্বাচন, বিচারবহির্ভূত হত্যা—সব মিলিয়ে এই সরকারকে অনেকেই দক্ষিণ এশিয়ার "মডার্ন ফ্যাসিজম"-এর উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। আর তাই প্রশ্ন উঠে—সরকার গেছে, কিন্তু প্রশাসনের নিচের স্তরে এখনও সেই ছাপ কেন? কে রেখেছে এই চিহ্ন? কেন সরানো হয়নি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি সরকারি রশিদ থেকে? এটি শুধু একটি ছবি নয়—এটি একটি সময়, একটি নির্যাতনমূলক শাসনের প্রতীক, যা মানুষ আজ ভুলে যেতে চায়। নতুন সরকার, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে শপথ নিয়েছে, তার জন্য এমন সব অচিহ্নিত প্রতীকের দ্রুত অপসারণ জরুরি। পায়রা ইউনিয়নের এই রশিদ যেন আর না হয় ইতিহাসের এক কষ্টদায়ক রিমাইন্ডার।